Summery
এই লেখায় আর্সেনিক দূষণের স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। প্রায় ৬০ মিলিয়ন মানুষ আর্সেনিক দূষিত পানি পান করছে, যা ক্যানসার, কিডনি এবং লিভার সমস্যা সৃষ্টি করছে। সস্তা প্রযুক্তি যেমন সোনো আর্সেনিক ফিল্টার এবং রিভার্স অসমোসিস ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে, এই সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান এবং সচেতনতা প্রয়োজন। সরকারি ও সামাজিক উদ্যোগে আর্সেনিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
কল্পনা করুন, আপনি একটি সাদা পরিষ্কার গ্লাসে ঠাণ্ডা পানি ঢালছেন। এক সময় আপনি জানতেন, এই পানি পান করাই হবে আপনার দিনের প্রথম স্নান, তবে এই এক গ্লাস পানির ভেতরেই লুকিয়ে থাকতে পারে জীবনের সবচেয়ে বড় হুমকি। আপনার শরীরে সেই আর্সেনিক, যা অদৃশ্য, অনুভূতিহীন এবং ধীরে ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবে আপনার স্বাস্থ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। এক সময়ের নিরাপদ মনে হওয়া এই পানি এখন আপনার জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই ঘটনাটি একমাত্র বাংলাদেশেরই নয়, পৃথিবীর একাধিক দেশে আর্সেনিক দূষণের ভয়াল প্রভাব আমরা দেখতে পাই। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ, যেখানে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ আর্সেনিক দূষিত পানি পান করছে। অথচ, ১৯৭০ সালের দিকে এমন পানি মানুষের জীবনকে কল্যাণে পরিণত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল।
আর্সেনিক দূষণ আজকাল এক সন্নিকটে উপস্থিত কিন্তু অবহেলিত শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি এমন একটি বিষাক্ত উপাদান যা প্রাথমিকভাবে পানিতে না দেখলেই, শরীরে তার উপস্থিতি বোঝা কঠিন, এবং দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর তবেই এর মারাত্মক স্বাস্থ্য প্রভাব ফুটে ওঠে। চলুন, আজ আমরা জানবো, কীভাবে আর্সেনিক দূষণ পৃথিবীজুড়ে মানবজীবনকে বিপদের সম্মুখীন করছে এবং বাংলাদেশে এই সমস্যা কীভাবে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
আর্সেনিক দূষণ কী?
আর্সেনিক একটি রাসায়নিক উপাদান যা প্রাকৃতিকভাবে মাটিতে উপস্থিত থাকে। এটি সাধারণত সোনা খনন এবং অন্যান্য খনিজ উত্তোলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিতে প্রবাহিত হয়ে থাকে। আর্সেনিক পানির মধ্যে আর্সেনিক অ্যাসিড এবং আর্সেনাস অ্যাসিডের আকারে থাকে, যা সাধারণত নিরপেক্ষ পিএইচ মানে দ্রবীভূত হয়ে যায়।
WHO এবং EPA পানিতে আর্সেনিকের নিরাপদ পরিমাণ ১০ μg/L নির্ধারণ করেছে, তবে অনেক অঞ্চলে এই পরিমাণের চেয়ে বেশি আর্সেনিক রয়েছে, যা পানীয় জলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দূষণ
ভূগর্ভস্থ পানির আর্সেনিক দূষণ একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা, যা বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আর্সেনিক প্রাকৃতিকভাবে মাটিতে উপস্থিত থাকে এবং কিছু বিশেষ ভূতাত্ত্বিক অবস্থা বা খনিজের সংমিশ্রণে এটি ভূগর্ভস্থ পানিতে চলে আসে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেকং এবং অন্যান্য নদী প্রবাহের সমতলভূমি অঞ্চলে বিশেষত আর্সেনিকের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়, যেখানে পানি প্রবাহের সঙ্গে এটি মাটির নিচে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্বব্যাপী আর্সেনিক দূষণ:
আর্সেনিক দূষণের প্রভাব বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে দেখা যায়। প্রাকৃতিকভাবে আর্সেনিক দূষিত পানি পাওয়া যায় এমন দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, চীন, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, তুরস্ক, মিয়ানমার এবং মালয়েশিয়া উল্লেখযোগ্য।
- বাংলাদেশ: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫৯টি জেলায় ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। বিশেষত দক্ষিণাঞ্চলের অঞ্চলগুলির টিউবওয়েলে আর্সেনিকের পরিমাণ মারাত্মকভাবে বেশি। এটি এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক, কারণ দেশে আর্সেনিক দূষিত পানি পান করছে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ।
- ভারত: ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশের কিছু অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের পরিমাণ অনেক বেশি। বিহারের ১৩টি জেলা আর্সেনিকের উচ্চমাত্রায় আক্রান্ত, যার ফলে স্থানীয় জনগণ স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।
আর্সেনিক দূষণের কারণ:
আর্সেনিক ভূগর্ভস্থ পানিতে সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত থাকে, বিশেষত যে অঞ্চলে শিলামাটি, বালি এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে। পললীয় এলাকা যেমন গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেকং ডেল্টার মতো নদীভূমি অঞ্চলে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি। এই ধরনের অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানি অক্সিজেনের অভাবে আর্সেনিক দ্রবীভূত হয়ে যায়। কিছু স্থানে মাটি বা পাথরের মধ্যে আর্সেনিকের উপস্থিতি এমনভাবে থাকে যে, যখন পানি এগুলির মধ্যে প্রবাহিত হয়, তখন এটি পানিতে মিশে যায়। তাছাড়া, সোনা উত্তোলন বা অন্যান্য খনিজ উত্তোলনকারী শিল্পও আর্সেনিকের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
এলাকা অনুযায়ী আর্সেনিক দূষণের পরিমাণ:
বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণের পরিমাণ প্রধানত গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সাগরীয় অঞ্চলের নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। এই অঞ্চলের পানিতে আর্সেনিকের পরিমাণ ৫০ থেকে ৩০০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপদ সীমা (১০ μg/L) থেকে অনেক বেশি।
এছাড়া, ভূগর্ভস্থ পানির গভীরতা এবং প্রাচীন স্তরের সঙ্গে আর্সেনিকের উপস্থিতি সম্পর্কিত। ২০ মিটার থেকে ১০০ মিটার গভীর কূপগুলোতে আর্সেনিকের পরিমাণ বেশি, কারণ এই গভীরতর পানি পুরনো স্তরের মাটি বা শিলার মাধ্যমে প্রবাহিত হয়, যেখানে আর্সেনিকের উপস্থিতি বেশি।
ফকিরহাটে আর্সেনিক দূষণ: ৬০-৭০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ২৮,৪২৬টি নলকূপের মধ্যে ১৩,৯৭১টি নলকূপে আর্সেনিকের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেশি। বিশেষত সদর, নলধা-মৌভোগ, বাহিরদিয়া-মানসা ও পিলজংগ ইউনিয়নে আর্সেনিক দূষণ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিছু নলকূপে প্রতি লিটারে ৫০০ মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক পাওয়া গেছে, যা WHO ও বাংলাদেশ সরকারের সহনীয় সীমার চেয়ে অনেক বেশি। জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা এবং ভারী ধাতুর উপস্থিতি সমস্যা আরও ঘনীভূত করেছে, যার কারণে ৬০-৭০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা:
বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি আর্সেনিক দূষণের কারণ এবং এর প্রভাব সম্পর্কিত অনেক গবেষণা পরিচালনা করছে। ২০০৭ সালের একটি গবেষণায় বলা হয় যে, ৭০টিরও বেশি দেশে ১৩৭ মিলিয়ন মানুষ আর্সেনিক দূষিত পানি পান করছে। এছাড়া, চীন, ভারত এবং বাংলাদেশে আর্সেনিকের প্রভাব বিষয়ে গবেষণার ফলাফল শেয়ার করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে সঠিক সমাধান বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এটি স্পষ্ট যে, আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা, তবে এটি বিশেষভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে আর্সেনিক দূষণের কারণে স্বাস্থ্যজনিত সংকট বাড়ছে।
আর্সেনিকের স্বাস্থ্যঝুঁকি
আর্সেনিকের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার মানুষের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদী লক্ষণ যেমন ত্বকে কালো দাগ, পেটের সমস্যা এবং বমি হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবে আর্সেনিক ক্যানসার, কিডনি ও লিভারের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। WHO অনুযায়ী, আর্সেনিকের পানির মাত্রা যদি ৫০ μg/L এর বেশি হয়, তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে, বাংলাদেশের ৪৯% পানিতে আর্সেনিকের অনিরাপদ মাত্রা পাওয়া গেছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, আর্সেনিকের উপস্থিতি দক্ষিণ অঞ্চলের পানিতে বেশি, যেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে লবণাক্ত পানি ভূগর্ভস্থ পানির সাথে মিশে আর্সেনিক নিঃসরণ বাড়াচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত সীমার চেয়ে অনেক বেশি আর্সেনিক রয়েছে, যা মানুষের স্বাস্থ্য জন্য মারাত্মক হুমকি। গবেষকরা দ্রুত পানি পরিশোধন প্রযুক্তি বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন।
বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণ: একটি জনস্বাস্থ্য সংকট
বাংলাদেশে আর্সেনিকের প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও প্রথমদিকে এটি গোপন রাখা হয়েছিল। ১৯৭০ সালের পর, UNICEF এবং বিশ্বব্যাংক টিউবওয়েলের মাধ্যমে গভীর ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু এ সময় আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে আর্সেনিক দূষণের বিষয়টি সামনে আসে এবং তখন থেকে এটি বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষভাবে আর্সেনিক দূষণের শিকার, যেখানে টিউবওয়েল ব্যবহার করা হয়। যেহেতু টিউবওয়েলের পানি সাধারণত ২০ থেকে ১০০ মিটার গভীর থেকে তোলা হয়, এতে আর্সেনিকের পরিমাণ উচ্চ হতে পারে।
আর্সেনিক দূষণ মোকাবিলায় সমাধান
আর্সেনিক দূষণ বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা, এবং এটি মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন সমাধান এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, কেবল প্রযুক্তি নয়, সমন্বিত সরকারি উদ্যোগ, জনসচেতনতা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
১। পানি পরিশোধন প্রযুক্তি:
আর্সেনিক দূষণ মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকরী সমাধান হচ্ছে পানি পরিশোধন প্রযুক্তি। সস্তা এবং কার্যকরী কিছু প্রযুক্তি যেমন সোনো আর্সেনিক ফিল্টার বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ফিল্টারে ব্যবহার করা হয় আয়রন বা স্যান্ড, যা আর্সেনিককে শোষণ করে এবং পানি নিরাপদ করে তোলে। এর ব্যবহার সহজ এবং সাশ্রয়ী হওয়ায় এটি গ্রামীণ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হল রিভার্স অসমোসিস (Reverse Osmosis, RO)। এই প্রযুক্তি পানির ভেতর থেকে আর্সেনিক এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ সরিয়ে দেয়। তবে, এটি কিছুটা ব্যয়সাধ্য হতে পারে, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে, যেখানে বিদ্যুৎ এবং আনুষঙ্গিক খরচ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
২। আর্সেনিক ফিল্টার এবং ইনস্টলেশন উদ্যোগ:
বাংলাদেশ সরকার ও কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা আর্সেনিক ফিল্টার এবং ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে। পানির উন্নত মান নিশ্চিত করতে, ফিল্টারিং সিস্টেমের উন্নয়ন এবং সঠিক ইনস্টলেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয়ভাবে সাশ্রয়ী পানির ফিল্টার ব্যবস্থা স্থাপন করে জনসাধারণকে নিরাপদ পানি সরবরাহ করা সম্ভব।
৩। সেচ ব্যবস্থায় উন্নয়ন:
কৃষিতে আর্সেনিকের কারণে পানির দূষণ এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে আর্সেনিক মাটিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকে। এজন্য কৃষি সেচ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। বিশেষত, উন্নত সেচ প্রযুক্তি যেমন ড্রিপ ইরিগেশন ব্যবহার করা যেতে পারে, যা পানির অপচয় কমিয়ে আর্সেনিক দূষণ রোধে সহায়ক হবে।
৪। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা:
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আর্সেনিক দূষণ আরও তীব্র হচ্ছে, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার কারণে। তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলীয় অঞ্চলে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। বিশেষত, বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে পানি শোধন এবং আর্সেনিক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
৫। জনসচেতনতা এবং শিক্ষা:
একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হলো আর্সেনিক দূষণ সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি। স্থানীয় জনগণকে আর্সেনিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানানো এবং নিরাপদ পানির ব্যবহার সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতা সেমিনার এবং প্রশিক্ষণ আয়োজন করা যেতে পারে।
৬। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উন্নয়ন:
আর্সেনিক দূষণ রোধে নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং গবেষণা চলতে থাকবে। বাংলাদেশে বিজ্ঞানীদের দ্বারা আর্সেনিক পরিশোধন প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিদেশি প্রযুক্তি, যেমন জার্মানি থেকে আনার প্রযুক্তি, আর্সেনিক নিরীক্ষণ এবং পরিশোধন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
৭। সরকারি পদক্ষেপ:
সরকারের পক্ষ থেকে আর্সেনিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি জাতীয় নীতি এবং বাস্তবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সরকারের পাশাপাশি, স্থানীয় সরকার ও উপজেলা প্রশাসনকে স্থানীয়ভাবে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তহবিল বরাদ্দ করতে হবে। এতে আর্সেনিক দূষিত পানি ব্যবহারকারী জনগণের জন্য দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এই সমাধানগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে আর্সেনিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, এবং বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
Reference:
- https://sharebiz.net/%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%A6%E0%A7%82%E0%A6%B7%E0%A6%A3-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7-%E0%A6%93/
- https://www.prothomalo.com/opinion/%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%98%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%A6%E0%A7%82%E0%A6%B7%E0%A6%A3
- https://file-chittagong.portal.gov.bd/uploads/6b9a9df8-2650-4326-bbfd-55418d77e00d//66d/6ec/c65/66d6ecc65381d193650961.pdf
- https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95_%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
- https://bangla.thedailystar.net/environment/natural-resources/water-resources/news-535631